রবিবার, ৭ মার্চ, ২০১০

করলা

korola1

করলা একটি পুষ্টিকর সবজি। পাশাপাশি ওষুধের কাজও করে থাকে। বিশষ করে ভিটামিনের অভাব, গুঁড়া কৃমিতে, বাতের ব্যথাতে, বিষাক্ত ক্ষতে, রক্তপিত্তে ও অরুচিতে করলা খুবই উপকারি।
করলা চাষে উর্বর বেলে দো-অাঁশ মাটির প্রয়োজন হয়। এছাড়া পলি দো-অাঁশ ও দো-অাঁশ মাটিতেও করলা ভাল জন্মে।
করলা চাষের সময় সাধারণত অক্টোবর-নভেম্বর ও নভেম্বর_ ফেব্রুয়ারি মাস।
করলা চাষের জমিতে ৩/৪ বার আড়াআড়িভাবে চাষ এবং মই দিয়ে ঝুরঝুরে করতে হবে। প্রতি মাদার দূরত্বে ১০০ সে. মি. প্রস্থে ৪৫ সে.মি এবং গভীরতায় ৩০ সে. মি. হতে হবে। প্রতি মাদায় ৫ কেজি গোবর বা পচা আবর্জনা সার, ৫০ গ্রাম টিএসপি ও ৩০ গ্রাম এমপি সার মাদার মাটির সঙ্গে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। সার প্রয়োগের ৭ দিন পর প্রতি মাদায় ৩/৪টি সতেজ ও পুষ্টবীজ ২ থেকে ৩ সে.মি গভীরে বপন করতে হবে। বীজের আবরণ শক্ত বলে চারা বের হতে দেরী হবে। তাই তাড়াতাড়ি চারা গজানোর জন্য বীজ ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। পানি থেকে তুলে বীজের আবরণ না ফাটা পর্যন- একটি ভেজা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। বীজের আবরণ ফাটার পর বীজ মাদায় বপন করতে হয়। প্রতি হেক্টরে ৪ থেকে ৫ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়।
করলার চারা ৮ থেকে ১০ সে. মি. বড় হলে প্রতি মাদায় ২টি সুস্থ-সবল চারা রেখে বাকিগুলো তুলে ফেলতে হবে। চারা গজানোর ২ সপ্তাহ পর ১ম, ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ পর ২য় এবং ৭ থেকে ৮ সপ্তাহ পর ৩য় কিস-িতে প্রতিবার ২০ গ্রাম ইউরিয়া সার প্রতি কিস-িতে গাছের গোড়ার চারপাশে প্রয়োগ করতে হয়। উপরি প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে ভাল করে মিশিয়ে দিতে হবে। গাছের ফুল ও ফল ধরা শুরু হলে জমিতে খড় বিছিয়ে দিতে হয়। এতে মাটির রস তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যেতে পারে না। ফলনও ভাল হয়। তাছাড়া নিয়মিত নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার এবং মাঝে মাঝে মাটি কুপিয়ে আলগা করে গাছের গোড়ায় মাটি দিয়ে উঁচু করে দিতে হবে। এতে সারির মাঝে নালা হয় এবং সহজে বর্ষার পানি নিষ্কাশিত হয়।
পোকা-মাকড়ের মধ্যে মাজরা পোকা, মাছি পোকা, জাব পোকা ক্ষতি করে। রোগের মধ্যে পাউডারি মিলডিউ ও ডাউনি মিলডিউ করলার বেশ ক্ষতি করে। এসব রোগ ও পোকামাকড় দমনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
করলা বীজ বপনের ৪০ থেকে ৪৫ দিন পর গাছে ফুল আসতে শুরু করে এবং এর ১৫ থেকে ২০ দিন পর ফসল সংগ্রহ শুরু হয়। কচি অবস্থায় বীজ শক্ত হবার আগেই জমি থেকে ২ দিন পর পর ফসল সংগ্রহ করতে হয়। উন্নত পদ্ধতিতে চাষ করে হেক্টরপ্রতি ৫ থেকে ৬ টন করলা পাওয়া যায়।
দেশের প্রায় সব জেলাতেই করলার কম-বেশি আবাদ হয়ে থাকে। পুষ্টিকর এই সবজিটি আমাদের দেশে ভাজি হিসেবেই সুপরিচিত।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন