রবিবার, ৭ মার্চ, ২০১০

স্ট্রবেরি চাষ

স্ট্রবেরি একটি রসালো ও সুস্বাদু ফল। এর গাছ দেখতে অনেকটা থানকুনি ও আলু গাছের মত। তবে পাতা আরো বড় ও চওড়া। এটি থানকুনি গাছের মতই রানারের মাধ্যমে চারা চারদিকে ছড়াতে থাকে। পাশ থেকে বের হওয়া পরিণত রানার কেটে আলাদা লাগিয়ে স্ট্রবেরির চাষ করা হয়। বর্তমানে এর বীজও পাওয়া যাচ্ছে।
স্ট্রবেরি শীতপ্রধান দেশের ফল। বেশি তাপমাত্রার কারণে বাংলাদেশে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন- এ গাছ বাঁচিয়ে রাখা খুব কঠিন। কাঁচা স্ট্রবেরি ফল দেখতে সবুজ হলেও পাকা অবস্থায় টকটকে লাল রঙের হয়। ফলটি দেখতে অনেকটা লিচুর মত এবং নানা পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ। এখন বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় স্ট্রবেরির বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। এটি একটি লাভজনক ফসল হিসেবে সারাদেশে পরিচিতি লাভ করেছে।
বাংলাদেশ স্ট্রবেরি এ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা যায়, গত বছর আকাফুজি এগ্রোটেকনলজি রাজশাহীতে, গোল্ডেন সিড্স যশোরে, এলাইড এগ্রো পঞ্চগড়ে, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল লালমনির হাটে, নর্থ ফিল্ড বগুড়ায় বাণিজ্যিকভাবে স্ট্রবেরির চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। এবারো এসব প্রতিষ্ঠান প্রায় তিন শতাধিক বিঘা জমিতে স্ট্রবেরির চাষ করেছে। পঞ্চগড়ে এ্যাড. রায়হানুল হক ২৪ হাজার, টাঙ্গাইলের মধুপুরে সাদিকুর রহমান সুমন ও শামীম আহম্মেদ ২২ হাজার, গাইবান্ধার শংকর ১০ হাজার, দিনাজপুরের আল আমিন ৬ হাজার, ঝিনাইদহের আবুল বাসার ১৫ হাজার, সৈয়দপুরে আলহাজ্ব উদ্দিন সরকার ১৭ হাজার স্ট্রবেরির চারা লাগিয়ে উৎপাদন করছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম. মুনজুর হোসেন স্ট্রবেরি চাষের কথায় বলেন। তিনি ১৯৯৬ সালে জাপান থেকে একটি স্বল্প দিবা দৈর্ঘ্য জাতের স্ট্রবেরি বাংলাদেশে আবাদের চেষ্টা করেন। কিন্তু এই জাতটি তখন রানারের মাধ্যমে বংশ বৃদ্ধি করেনি। এমনকি তখন যে ফল ধরেছিল তা ছিল আকারে অনেক ছোট, যা বাণিজ্যিকভাবে চাষের উপযোগী ছিল না। পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে অবস্থিত টিসু্য কালচার ল্যাবে গত কয়েক বছর ধরে গবেষণার মাধ্যমে একটি জাত উদ্ভাবনে সক্ষম হন যা বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে।
অধ্যাপক ড. এম. মুনজুর হোসেন গত ৫ বছর ধরে রাজশাহী মহানগরী পদ্মা আবাসিক এলাকার নামোভদ্রায় আকাফুজি নার্সারিতে স্ট্রবেরির সফলভাবে চাষ করে আসছেন। এ বছর তিনি প্রায় ১০ বিঘা জমিতে স্ট্রবেরির চাষ করেছেন। এবার তিনি স্ট্রবেরি এ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় চারা সরবরাহ করেছেন। বাংলাদেশের সব এলাকার সব মাটিতেই স্ট্রবেরি চাষ সম্ভব বলে প্রমাণিত হয়েছে। একবিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করলে খরচ হয় প্রায় এক লাখ টাকা এবং ছয় মাসে আয় হয় প্রায় চার লাখ টাকা বলে একজন স্ট্রবেরি চাষি জানান।
ঢাকার বিভিন্ন সুপার মার্কেটগুলোতে বিদেশ থেকে আমদানি হয়ে আসা স্ট্রবেরি পাওয়া যায় এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা কেজি দরে। স্ট্রবেরি চাষিদের জন্য এখন বাজার তৈরি হয়েছে। সহজে বাজারজাত করতে পারছে তারা। এবার মাঠ পর্যায়ে প্রতিকেজি স্ট্রবেরির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে চার'শ টাকা থেকে পাঁচ'শ টাকা। বাংলাদেশ স্ট্রবেরি এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. একেএম রফিউল ইসলাম বলেন, স্ট্রবেরি এ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সংখ্যা বর্তমানে ২শ' ১০জন। এই সম্মেলনে সদস্য সংখ্যা আরো বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী।
স্ট্রবেরি লাভজনক ফসল হওয়ায় বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি এর চাষ করে শত শত কৃষক ও বেকার যুবক স্বাবলম্বী হচ্ছে। আগামীতে আমাদের দেশে স্ট্রবেরির জুস, জ্যাম, জেলি, আচার তৈরির কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে বলে তিনি মনে করেন।

1 টি মন্তব্য:

  1. Las Vegas - Casino, Events, Tickets and more - JMH Hub
    The Hotel is 춘천 출장안마 located at: Casino, Hotel, Casino, and Restaurant. There 고양 출장안마 are 9 restaurants nearby including 정읍 출장샵 2 bars/lounges and a 1,000-square-foot event center. Rating: 3.7 · 서울특별 출장샵 ‎12 논산 출장샵 reviews · ‎Price range: $

    উত্তরমুছুন