শনিবার, ৬ মার্চ, ২০১০

ভেজাল সার চেনার উপায়

ইউরিয়া : এই সারে ভেজাল খুবই কম। তবে ভেজাল ইউরিয়া চিনতে হলে চা চামচের এক চামচ ইউরিয়া সার দুই চামচ পরিমাণ পানিতে দেওয়ার পর হাত দিলে যদি ঠাণ্ডা অনুভব না হয় তাহলে বুঝতে হবে যে এইটি ভেজাল সার।
টিএসপি : প্রকৃত বা ভালো টিএসপি সারে অম্ল স্বাদ যুক্ত ঝাঁঝালো গন্ধ থাকবে। কিন্তু ভেজাল সারে এই গন্ধ পাওয়া যাবে না।
এক চামচ টিএসপি সার আধা গ্লাস ঠাণ্ডা পানিতে মেশালে সার পুরোপুরি গলে যাবে এবং পরিষ্কার ডাবের পানির মতো পরিষ্কার দ্রবণ তৈরি করবে। ভেজাল টিএসপি হলে এর রকম হবে না।
প্রকৃত বা ভালো টিএসপি সার অধিক শক্ত বলে দুই আঙুলে চাপ দিলে সহজে ভাঙবে না, কিন্তু ভেজাল টিএসপি সার সহজেই ভেঙে যায়। এছাড়াও ভেজাল টিএসপি দানার ভেতরে অংশে নানা রঙের হতে পারে।
এসএসপি সার : এক চা চামচ পরিমাণ এসএসপি সার আধা গ্লাস পানিতে মেশালে নমুনাটি আংশিক দ্রবীভূত হয়ে পানি ঘোলাটে করে এবং অবশিষ্ট অংশ দ্রবীভূত না হয়ে তলানি হিসেবে জমা হয়, তাহলে বুঝতে হবে ওই এসএসপি সার ভেজাল।
এই সার অপেক্ষাকৃত নরম বলে বুড়ো আঙুলের চাপে সহজেই ভেঙে যাবে। একটি কাচের পাত্রে বা গ্লাসে এক চামচ পরিমাণ রেখে হাইড্রোক্লোরিক এসিড ১৫ থেকে ২০ ফোঁটা মেশানোর পর যদি বুদবুদ লক্ষ্য করা যায় তাহলে বুঝতে হবে যে, এই এসএসপি সারে ভেজাল হিসেবে চুন বা ডলোমাইট ব্যবহার করা হয়েছে।
ডিএপি : এক চামচ ডাইঅ্যামোনিয়াম ফসফেট বা ডিএপি সার এক টুকরো কাগজের ওপর খোলা অবস্থায় এক থেকে দুই ঘণ্টা রেখে দিলে যদি সারের নমুনা ভিজে না ওঠে তাহলে বুঝতে হবে তা ভেজাল ডিএপি।
এফএমপি : ভেজাল এফএমপি সার খুবই শক্ত। পাথরের মতো। পানিতে গলে না। একটি কাচের গ্লাসে এক চামচ পরিমাণ এই সার ২ মাস ভিজিয়ে রাখলেও তা গলবে না।
পটাশ : আধা চামচ মিউরেট অব পটাশ বা এমওপি সার কাচের গ্লাসে অর্ধেক পানিতে মেশালে ভালো সার হলে তা পুরোপুরি গলে যাবে এবং পানিতে পরিষ্কার দ্রবণ তৈরি করবে। আর যদি ওই সার ভেজাল হয় তাহলে রং ভেসে উঠবে এবং তলানি আকারে গ্লাসের নিচে জমা হবে।
এসওপি : এ চা চামচ পটাশিয়াম সালফেট বা এসওপি সার কাচের পাত্রে রেখে ১০ ভাগ হাইড্রোক্লোরাইড এসিড মেশালে যদি বুদবুদ ওঠে তাহলে ধরে নিতে হবে, ওই সারে চুন জাতীয় পদার্থ ভেজাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
এসটিকেএস বা মিশ্র সার : এই সারে ভেজালের ধরন এত বিচিত্র যে, তা সহজেই মাঠ পর্যায়ে চিহ্নিত করা যায় না। তবে মাটি এবং ডলোমাইট দিয়ে এসটিকেএস সার তৈরি করা হয় বলে এই সার আঙুলে চাপ দিলে সহজেই গুঁড়ো হয়ে যায়। ভেজাল সারে দানার ভেতর ও বাইরের প্রলেপের রং আলাদা হবে।
জিপসাম : একটি কাচের বা চিনা মাটির পাত্রে এক চামচ পরিমাণ এই সারের ওপর ১০ থেকে ১৫ ফোঁটা পাতলা (১০%) হাইড্রোক্লোরাইড এসিড দিলে যদি আস্তে আস্তে বুদবুদ দেখা দেয় তাহলে বুঝতে হবে এটি ভেজাল সার।
জিংক সালফেট (হেপ্টা) : ভালো সার দেখতে হবে স্ফটিক আকৃতির এবং ঝুরঝুরে। আধা গ্লাস ঠাণ্ডা পানিতে এক চা চামচ জিঙ্ক সালফেট (হেপ্টা) মেশালে যদি তা ভালো হয় তাহলে পুরো নমুনাটিই গলে যাবে এবং পাত্রে কোনো রকম তলানি থাকবে না।
জিংক সালফেট (মনো) : ভালো জিঙ্ক সালফেট (মনো) দেখতে দানাদার। আধা গ্লাস ঠাণ্ডা পানিতে এক থেকে দুই চামচ সার দিলে তা গলবে না এবং দ্রবণ হবে ঘোলাটে। ম্যাগনেশিয়াম সালফেট দিয়ে তৈরি ভেজাল সার হলে তা হবে ধবধবে সাদা।
বোরন (বরিক এসিড) : আধা গ্লাস পরিষ্কার পানিতে এক চা চামচ পরিমাণ বরিক এসিড মেশালে যদি এই নমুনা সার ভালো হয় তাহলে তা পুরোপুরি গলে যাবে এবং গ্লাসের তলায় কোনো তলানি জমবে না। যদি এর ব্যতিক্রম হয় তাহলে বুঝতে হবে, তা ভেজাল সার।
বোরন (সলুবর) : ভালো মানের এই সার দেখতে হবে ধবধবে সাদা এবং হালকা মিহি পাউডার। আধা গ্লাস ঠাণ্ডা পানিতে এক চা চামচ পরিমাণ এই সার মেশালে তা পুরোপুরি গলে যাবে এবং গ্লাসে কোনো রকম তলানি পড়বে না।
জৈব সার : ভালো মানের জৈব সারের কোনো রকম গন্ধ থাকবে না। দেখতে হবে কালো, নয়তো ধূসর। হাতের মুঠোয় চাপ দিলে দলা বাঁধবে না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন