রবিবার, ৭ মার্চ, ২০১০

সুস্বাদু নতুন ফল 'লনগান'

longan

রসে টই-টুম্বুর, তামাটে রঙ, মাঝারী আকারের, গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে 'লনগান'। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে সবচেয়ে সুস্বাদু ফলগুলোর মধ্যে অন্যতম 'লনগান' এবার বিজ্ঞানীদের তালিকায় যোগ হল। ১৯টি দেশের ৪২টি বিদেশি ফলগাছের সাথে এবার জাদুঘরে স্থান পেল এ ফলটি। মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড থেকে 'লনগান' বাংলাদেশে আসে ১৯৯৭ সালে এবং হাইব্রিড লনগান এসেছে ইন্দোনেশিয়ার বোগর এবং আমেরিকার ফ্লোরিডা থেকে। বাংলাদেশে নিয়ে এসেছেন বাকৃবির অধ্যাপক ও বাউ-জার্মপ্লাজম সেন্টারের পরিচালক ড. এম.এ. রহিম।
ড. রহিম জানান, স্বাদ ও গন্ধে এটি একটি উৎকৃষ্ট ফল। পৃথিবীর সবচেয়ে সুস্বাদু ফলের মধ্যে এটি অন্যতম। যারা খেয়েছেন, তাদের কাছে অত্যন- প্রিয়। এদেশে এ ফলটি সহজেই জন্মে। তারপরও সাধারণ মানুষের কাছে ফলটি নাম এখনো পেঁৗছায়নি। 'লনগান' একটি লিচু পরিবারের ফল। বাংলাদেশের সব জেলাতেই কম-বেশি লিচু চাষ হয়। বিশেষ করে দিনাজপুর, পাবনা জেলার ঈশ্বরদী, রাজশাহী, যশোর, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামে। লনগান এই জেলাগুলোতে বাণিজ্যিকভিত্তিতে চাষ করা যাবে।
ড. রহিম আরো জানান, উন্নত লনগানের ফল তুলনামূলকভাবে ছোট, ১.৫-৩ সে.মি. চওড়া, গোলাকার, চামড়া পাতলা, চামড়ার উপরের অংশ সামান্য খয়েরী-হলুদাভ রঙয়ের, শাঁস ৬০-৭৫ ভাগ এবং বীজের পরিমাণ ৪০-২৫ ভাগ।
খুব অল্প জাতে ২০-৩০ ভাগ বীজ ধারণ করে। ফলের ওজন ২০-৪০ গ্রাম। ফল মাঝারী আকারের, কিঞ্চিৎ চ্যাপ্টা, মিষ্টি, রসালো ও সুমিষ্ট গন্ধযুক্ত। মিষ্টতা ১৫-২৫ ভাগ। বীজের চারদিকে সাদা রঙের নরম, রসালো ও পুরু একটি আবরণ থাকে, যাকে এরিল বলে। এই অংশই আমরা খেয়ে থাকি। সাধারণত একটি বয়স্ক গাছে ৪০-১০০ কেজি ফল পাওয়া যায়।
জার্মপ্লাজম সেন্টারের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শামসুল আলম মিঠু জানান, লনগান ফলে পুষ্টিমান লিচুসহ অন্যান্য অনেক ফলের তুলনায় বেশি। এর প্রতি ১০০ গ্রাম ফলে রয়েছে প্রোটিন ১ গ্রাম, চর্বি ০.৫ গ্রাম, শর্করা ২৫.২ গ্রাম, অাঁশ ০.৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২ গ্রাম, ফসফরাস ৬ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.৩ গ্রাম, এসকোরবিক এসিড ৮ গ্রাম, ভিটামিন-এ ২৮ আইইউ। এ ছাড়াও অন্যান্য ভিটামিনসমূহ রয়েছে ০.১১ মিলিগ্রাম। বাংলাদেশে এ ফলের চাষ বাণিজ্যিকভাবে শুরু করলে দেশের একদিকে যেমন ফলের চাহিদা পূরণ হবে তেমনি রফতানি করেও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন